ইসলামী সাংস্কৃতিক রেনেসাঁসের কবি মতিউর রহমান মল্লিক [রহিমাহুল্লাহ] || আব্দুল্লাহ তাজরিয়ান || সাইমুম নিউজ

 

সাইমুমের মিলন মেলায় ২০০৯

সাইমুমের মিলন মেলায় ২০০৯


ইসলামী সাংস্কৃতিক রেনেসাঁসের কবি

মতিউর রহমান মল্লিক [রহিমাহুল্লাহ]

লেখকঃ আব্দুল্লাহ তাজরিয়ান

*
কে এই মল্লিক?
-
"কথা কাজে মিল দাও আমায় রাব্বুল আলামীন।
আল জিহাদ ফি সাবিলিল্লায় রাখো বিরামহীন।
মোনাফেকি যা আছে এই জীবন থেকে মোর
দূর করতে দাও দৃঢ় ঈমান তপ্ত আঁখি লোর
চরিত্র দাও বলিষ্ঠতর, আমলে সালেহীন।"
-
এই প্রার্থনামূলক গান থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে মল্লিক আসলে কে? এবং চেয়েছিলেন কি? কি তার মিশন এবং ভিশন ছিলো? আমি প্রথমে স্যারকে জোর করে সম্মান দিব না। সব তত্ত্ব উপাত্ত অনুসারে আপনারাই বিবেচনা করবেন ওনার প্রকৃত মর্যাদা। আসুন তাহলে, এগিয়ে চলি লক্ষ্য পানে...
-
প্রত্যুষ
__________

মতিউর রহমান মল্লিক ( ১৯৫০-২০১০ )  হলেন একজন বাংলাদেশী কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, গীতিকার, সুরকার এবং শিল্পী। তিনি বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
ইসলামি গান রচনার ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের নাম অদ্বিতীয়। তবে মল্লিককে নজরুলের পরিপূরক বা নজরুলের পরে দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলা সাহিত্যে ইসলামি  ধারায় অসংখ্য গান ও কবিতা রচনা করেছেন তিনি। তাকে অনেকেই 'সবুজ জমিনের কবি' ও 'মানবতার কবি' বলে থাকেন।
-
আল্লাহর প্রেমে যত্নবান মল্লিক
__________
প্রভুর প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে উঠতেন কবি। কিছু ছড়া-গানে দেখা যায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আবার কিছু গানে রবের প্রশংসা করেছেন। এভাবে দিন কাটিয়েছেন গানের পাখি মল্লিক।
.
"আজকে আমার প্রাণ সাগরে
আল্লাহ নামের নূর
উথাল পাথাল ঢেউ তুলেছে
যেন পাহাড় তুর।"
-
আবার গানে গানে মানুষকে আহ্বান করেছেন আল্লাহর দিকে। মন ও প্রাণ জুড়াতে।
-
"এসোনা আল্লাহর নামে গান গাই
এসোনা মন ও প্রান জুড়াই
আল্লাহু আকবর বল আল্লাহু আকবর।।
ও মধুর নামটি নিলে এ হৃদয় হাসে
ও মধুর নামে সুখ নেমে আসে
ও নামের তুলনা হবে না হবে না
তুলনা নাই নাই নাই।।"
-
আল্লাহর অপরূপ সৌন্দর্য্যের কথা ভেবে লিখেছেন ,
-
"তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর
না জানি তাহলে তুমি কত সুন্দর"
-
তার গানে এসেছে আল্লাহর বড়ত্বের তাকবির ধ্বনি।
-
"মুসলিম আমি সংগ্রামী আমি
আমি চির রণবীর
আল্লাহকে ছাড়া কাউকে মানিনা
নারায়ে তাকবির
নারায়ে তাকবির।।
বিপ্লবী আমি চির সৈনিক
চির দুর্জয় চির নির্ভীক
আল-কোরানের শমশির আমি
কুটি কুটি করি রাতের ভীড়
নারায়ে তাকবীর।। "






-
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
__________

মতিউর রহমান মল্লিক ১৯৫০ সালের ১লা মার্চ বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুন্সি কায়েম উদ্দিন মল্লিক। স্থানীয় জারিগানের দলের জন্য গান লিখতেন তিনি। মাতা আয়েশা বেগম। তৎকালীন রেডিওতে কবি ফররুখ আহমদ যে সাহিত্য আসর পরিচালনা করতেন সেই আসরে মল্লিকের বড় ভাই কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন। পিতার সান্নিধ্যে থেকে তিনি গানের প্রাথমিক জীবন শুরু করেন। জানা গেছে প্রাথমিক জীবনে রেডিওতে গান শুনেশুনে গান লেখা শুরু করেন তিনি। তখনকার তার প্রায় সকল গানই ছিল প্রেমের গান। এখানে বলে রাখা ভালো মানুষ আর প্রেম একে-অপরের সাথে ওতপ্রোত ভাবেই জড়িয়ে থাকে সবসময়। একজন শিশু জন্মের পর থেকে যখন আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠে শৈশবে মা-বাবা, ভাই-বোন, এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ভালোবাসা ও প্রেমে তার মানসিক দৃঢ়তা আসে। কৈশোরে গেলে বিপরীতের প্রতি আকর্ষণ সকলেরই থাকে। তিনি একইভাবে একারণেই হয়ত প্রেমকে ঘিরে গান রচনা করেছিলেন শুরুতে। পরবর্তীতে ইসলামী আদর্শে প্রভাবিত হয়ে ইসলামী ধারায় গান লিখা শুরু করেন।
মল্লিক বারুইপাড়া সিদ্দীকিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এরপর বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।



-
শিশুদের বন্ধু কবি
__________

শিশুদের জন্য কবিজি'র ছড়া-কবিতার ভাব দেখলে বোঝা যায় কেমন ভালোবাসতেন শিশুদের। তিনি বলে গেছেন,
-
“ফুলকুঁড়িদের মাঝে আমার
থাকতে লাগে ভালো
ফুলকুঁড়িরাই জ্বালছে দেশে
জ্ঞান-গরিমার আলো।
তারাতো নয় কাগজের ফুল
মেকী ফুলের কুঁড়ি
আসল ফুলের মেলা বসায়
সারাটা দেশ জুড়ি।’
-
তিনি কখনো দেখিয়েছেন শিশুদের আনন্দ আর হাসির খোরাক নিবারনের পদ্ধতি। অথবা কিছু অবুঝ মনের রঙের খেলা দেখিয়ে দিলেন তার কবিতায়।
-
“এই তো সেদিন রাত বারোটায় দেখি
হায়! হায়! হায়! চৌরাস্তায় একি
পিচ্চি ম্যালা,পনেরো ষোল আর
যুবক- তো নয় নাঙ্গা তলোয়ার
সমান তালে মারছে রঙের গোলা
ঠায় দাঁড়িয়ে হাসছে ক’জন ভোলা।"
-
শিশু-কিশোরদের কিভাবে উপদেশ দিতে হয় ওনি বেশ ভালো বুঝতেন। স্বভাবতই প্রত্যেকেই আমরা ছড়াকার। প্রত্যেকেই আমরা গান আওড়াই। এই দিকটা বিবেচনা করে সহজসরল ছড়ায় পড়া'র গুরুত্ব বোঝাতে উপদেশ দিয়েছেন এভাবে,
-
"পড়ো এবং পড়ো
যে পড়ে সে বড়ো
লেখার জন্য পড়ো
শেখার জন্য পড়ো।"
-
রাসূলের প্রেমে মাতোয়ারা কবি
__________

রাসূলের নামকে ভালোবেসে তিনি পৃথিবীকে ভালোবেসেছেন। কল্পনা করতে পারেন বিষয়টা কত গভীরের?
.
"পাখি তুই কখন এসে বলে গেলি
মোহাম্মদের নাম,
যে নাম শুনে পৃথিবীকে
ভালোবাসিলাম।"
-
আবার জীবনের সবকিছুর অনুপ্রেরণা হিসেবে রাসূলের (সাঃ) কাছে সমর্পণ করলেন নিজের সমস্ত কথা-আলোচনা। ফলে মূলত আল্লাহকে ভালবাসার নজীর দেখিয়েছেন।
-
"রাসুল আমার ভালোবাসা,
রাসুল আমার আলো আশা,
রাসুল আমার প্রেম বিরহের মূল আলোচনা। "
-
রাসূলের জীবনের বিশ্বস্ততাকে অন্তর থেকে সার্টিফাই করেছেন কবি।
-
"সে কোন বন্ধু বল বেশী বিশ্বস্ত
কার কাছে মন খুলে দেওয়া যায়
কার কাছে সব কথা বলা যায়
হওয়া যায় বেশী আশ্বস্ত
তার নাম আহমদ বড় বিশ্বস্ত।"



.
কর্মজীবন
__________

কর্মজীবনে কবি মতিউর রহমান মল্লিক সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক, ‘বিপরীত উচ্চারণ’ সাহিত্য সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন, মাসিক কলম পত্রিকার সম্পাদক এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
মতিউর রহমান মল্লিক শৈশব থেকেই বিভিন্ন ধরনের সংগঠন গড়ে তুলতে থাকেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকায় সমমনা সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে গড়ে তোলেন ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী। তারপর একে একে তার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের শহর, নগর, গ্রামগঞ্জে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যায়ল ও মাদরাসায় গড়ে ওঠে একই ধারার অসংখ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ বিশ্বের যেখানেই বাংলাভাষাভাষী মুসলমান রয়েছে সেখানেই গড়ে উঠেছে একই ধারার বহু সাংস্কৃতিক সংগঠন। আলহামদুলিল্লাহ।


-
প্রকাশিত গ্রন্থ ও অন্যান্য
__________

প্রচার চিন্তাহীন এ মানুষটি কাজ করেছেন ধর্মীয় বিশ্বাসের নিক্তিতে। ভিত্তিতে। মানবতার জন্য। ছোট বড় সবার জন্য লিখেছেন তিনি। তার লেখা অনেক কিন্তু কমই প্রকাশিত হয়েছে। ব্যক্তিগত সফলতার চেয়ে আদর্শিক সফলতার কথাই বেশি ভেবেছেন। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন আদর্শ লড়ে নির্ভীক, জিইয়ে থাকে সমস্ত বাঁধাবিপত্তি পেরিয়ে ; চড়াই-উতরাই। তার ভক্ত শুভাকাঙ্খীদের আকুল আকতিতে কথা ও সুর নিয়ে সংস্কৃতিপ্রেমীদের মাঝে উৎসাহের কারণে কিছু কাজকে গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ করেছেন।
.
নীষন্ন পাখির নীড়ে (কাব্যগ্রন্থ):আত্ম প্রকাশন
সুর-শিহরণ (ইসলামি গানের বই)
যত গান গেয়েছি (ইসলামি গানের সঙ্কলন)
ঝংকার (গানের বই)
আবর্তিত তৃণলতা (কাব্যগ্রন্থ) মোনালিসা প্রকাশন
তোমার ভাষার তীক্ষ্ন ছোরা (কাব্যগ্রন্থ) বাংলা সাহিত্য পরিষদ
অনবরত বৃক্ষের গান (কাব্যগ্রন্থ) মোনালিসা প্রকাশন
চিত্রল প্রজাপতি (কাব্যগ্রন্থ) প্রফেসর’স পাবলিকেশন্স
নির্বাচিত প্রবন্ধ (প্রবন্ধের বই)
রঙিন মেঘের পালকি (ছোটদের ছড়ার বই) জ্ঞান বিতরণী
প্রতীতি এক (ইসলামি গানের ক্যাসেট)
প্রতীতি দুই (ইসলামি গানের ক্যাসেট)
প্রাণের ভিতরে প্রাণ (গীতিকাব্য) উল্লেখযোগ্য।


.
অনুবাদক হিসেবে তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।" পাহাড়ি এক লড়াকু " নামে আফগান মুজাহিদদের অমর কীর্তিকলাপ তার বিখ্যাত অনুবাদ উপন্যাস যা কিশোকণ্ঠের পাঠকরা মন উজাড় করে পড়তেন নিয়মিত। মহানায়ক (উপন্যাস) ছাড়াও হযরত আলী ও আল্লামা ইকবালের মতো বিশ্বখ্যাত মুসলিম কবিদের কবিতাও অনুবাদ করেছেন তিনি।


.
স্বীকৃতি সমুহ
__________

সাহিত্যকর্মে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। কবি মতিউর রহমানের প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ও সম্মাননাঃ
-
সাহিত্য পুরস্কার : সবুজ-মিতালী সংঘ, বারুইপাড়া, বাগেরহাট
স্বর্ণপদক : জাতীয় সাহিত্য পরিষদ, ঢাকা
সাহিত্য পদক : কলমসেনা সাহিত্য পুরস্কার, ঢাকা
সাহিত্য পদক : লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদ
সাহিত্য পদক : রাঙামাটি সাহিত্য পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম
সাহিত্য পদক : খানজাহান আলী শিল্পীগোষ্ঠী, বাগেরহাট
সাহিত্য পদক : সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ
সাহিত্য পুরস্কার : সমন্বিত সাংস্কৃতিক সংসদ, বাগেরহাট
প্যারিস সাহিত্য পুরস্কার : বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ, ফ্রান্স
বায়তুশ শরফ সাহিত্য পুরস্কার : বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম
ইসলামী সংস্কৃতি পুরস্কার : ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রাম
সাহিত্য পুরস্কার : বাংলা সাহিত্য পরিষদ, ফ্রান্স।
কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার।



.
মৃত্যু
__________

ঘড়ি অচল হয়ে গেলে খরিদদারেরা যেমন ঘড়িটি আর ক্রয় করেন না একইভাবে হায়াত চলে গেলে আমরাও অচল। কবি মল্লিকের যেই চিন্তাধারা, যেই চিত্রকল্প পৃথিবী যতদিন রবে স্মরণ করবেই, ইনশাআল্লাহ। কবি আপন মৃত্যুর সাক্ষী। গানটির দিকে নজর দিন।
"
টিক টিক টিক টিক যে ঘড়িটা বাজে ঠিক ঠিক বাজে
কেউ কি জানে সেই ঘড়িটা লাগবে কয়দিন কাজে ।।
ঝকঝক ফকফক করে যদ্দিন ঘড়ি চেহারা
তদ্দিন তারে কিনতে চায় যে খরিদ দারেরা
সময় মত সময় দিলে সব খানে বিরাজে ।।"
-



অবশেষে প্রিয় কবি জীবনের আসল রূপ নিয়ে গান লিখে গিয়েছেন। দুনিয়ার এ জীবন যে খুবই মিছে তা তিনি সত্যিই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
"
পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়,
পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়।।
মরণ একদিন মুছে দেবে সকল রঙ্গিন পরিচয়।
পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়।
মিছে এই মানুষের বন্ধন,
মিছে মায়া স্নেহ প্রীতি ক্রন্দন।
মিছে এই মানুষের বন্ধন,
মিছে মায়া স্নেহ প্রীতি ক্রন্দন।
মিছে এই জীবনের রংধনু সাতরং,
মিছে এই জীবনের রংধনু সাতরং,
মিছে এই দুদিনের অভিনয়।
পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়।
মরণ একদিন মুছে দেবে সকল রঙ্গিন পরিচয়। "



-
মতিউর রহমান মল্লিক ১২ আগস্ট ২০১০ সালে রাতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনী সমস্যায় ভুগছিলেন।
__________
প্রার্থনাঃ আল্লাহ প্রিয় কবিকে জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।





2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads