রমাদানুল মুবারক, পরিকল্পনা ও কিছু কথাঃ ৪র্থ পর্ব

 


বিষয়ঃ রমাদানুল মুবারক, পরিকল্পনা ও কিছু কথা লেখকঃ শাকির হাসান পর্বঃ ০৪

সামাজিক প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আমল
একজন আদর্শ ব্যক্তি তথা মুখলিস মুমিন গড়ার প্রত্যয়ে ইসলাম যেহেতু সমাজকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় সেহেতু আমাদের সামাজিক কিছু দায়িত্ব ও রয়েছে। তা হতে পারে ফ্রেন্ড সার্কেল বা প্রতিবেশি অথবা কলিগদের মধ্যে।
 দেশ বা দেশের বাইরে যত ব্যস্তই থাকুন না কেন পরিচতজন, দেশি বা এলাকার ভাই-বোনেরা অথবা অফিসে কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ছোট করে হলেও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা। চাইলে তাতে আগ্রহী অমুসলিম বন্দুকেও দাওয়াত দিতে পারেন। এসব মাহফিলে ছোট করে হলেও নিজে বা কোন যোগ্য জনের দ্বারা রোজার গুরুত্ব, সারা বছরের জন্য শিক্ষা, বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা। এর বাইরে ইসলামের সামগ্রিকতা, পুরো বছরজুড়ে মৌলিক ইবাদত সমূহ পালন ও নিষেধসমূহ স্মরন করে দেয়া।
 আপনার যে বন্ধু-ভাই,বোনদের সাথে সবসময় দুষ্টুমি, আসা-যাওয়া করেন তাদের কে রোজা উপলক্ষ্যে হলেও রোজা রাখা অথবা ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে সাধ্যমত বলার চেষ্টা করা। যে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটিতে সবসময় দুষ্টমি করেন সেই গ্রুপটিতেও রোজা উপলক্ষ্যে বলতে পারেন অথবা তাদের মানসিকতা অনুসারে শেয়ার করতে পারেন আলেম বা স্কলারদেও ইসলামের বিভিন্ন আলোচনা। একই বিষয় করা যেতে পারে মুসলিম কলিগদের ক্ষেত্রেও।
 যাদের আসে পাশে মসজিদ আছে তথা মসজিদের সাথে যাদের নিয়মিত আসা-যাওয়ার সম্পর্ক, তারা রমজান উপলক্ষ্যে মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সহযোগিতা অথবা অনুমতি নিয়ে শিশুদের নিয়ে প্রতিযোগিতা ও আকর্ষনীয় পুরস্কারের আয়োজন করতে পারেন। তা হতে পারে জামাতে নামাজ আদায় চ্যালেঞ্জ, রোজা রাখা চ্যালেঞ্জ অথবা ইফতার করানো চ্যালেঞ্জ কিংবা পারিবারিক পয়েন্টে বর্ণনাসহ অন্য যেকোন উদ্যোগ। এটি ঐ মসজিদকে কেন্দ্র করে মুসলিম কম্যুনিটিকে আরো একাত্ম করবে।
 সাধারণত এটি অধিকাংশ জায়গাতেই হয়ে থাকে তবুও যদি আপনার মসজিদে না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে মসজিদের পরিচালনা পরিষদের সাথে কথা বলে ভাই/বোন ও শিশুদের জন্য সহিহ কুরআন তেলাওয়াতের প্রশিক্ষনে ব্যবস্থা করা যেতে পারলে অনেক ভালো হবে। যারা যারা শিখবে সবার পক্ষ থেকে সাওয়াব আপনার কাছে পৌঁছাবে ইনশাআল্লাহ (৪)।
 যারা দেশের বাইরে থাকছেন তথা মাল্টি রিলিজিয়াস সোসাইটিতে বসবাস করেন তারা বন্ধু ও কলিগদের সামনে প্রকাশ করুন আপনার রোজার কথা। এ নিয়ে গল্প করুন, এর শিক্ষা, বিধান, বিজ্ঞান নিয়ে আলাপ করুন। হয়তো এই আলাপ ও তাকে আকর্ষণ করে তুলতে পারে ইসলাম নিয়ে। কে জানে, সেই আকর্ষণ তাকে খুঁজে দিতে পারে হেদায়েতের পবিত্র উপত্যকায়। আর এর মর্যাদা কী অথবা আল্লাহর কাছে এর কত বেশি পুরস্কার তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেন।
 এর বাইরে আপনার বাস্তবতা, যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনানুসারে ইসলামের মৌলিকত্বের লঙ্ঘিত হবে না এমন যেকোন কিছুই করা যেতে পারে। কারণ সৃজনশীলতার ছড়াছড়ির এই যুগে ইসলামকে যতটা আকর্ষনীয় করে তুলতে পারবো ততটাই ইসলাম বিকশিত হবে তার আপন আলোয়। হয়তো সবমিলে অনেক কঠিন বা অনেক বেশি কিছু মনে হতে পাওে কিন্তু চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে এ সবই শুধু একটু মাথায় নেয়ার কাজ, তাহলেই দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য কাজের মত এসব আমলও সম্পন্ন হয়ে যাবে। আর যেহেতু জান্নাতের সুগন্ধময় রাইয়্যান দরজা অপেক্ষা করে সফল রোজাদার জন্য সেহেতু কিছুটা বিশেষ করে তো নিতেই হবে তাই না (৫)!
আল্লাহ আমাদের সকলকে এই রমজানের পরিপূর্ণ প্রস্তুতিসহ, রাসূল (সঃ) এর অনুকরনে আমলের গভীরতায় নিজেদের গুনাহ মাফ করিয়ে নেয়ার তৌফিক দান করুন, আমিন।
তথ্যসুত্র:
৪: সহিহ মুসলিম ৪৩১০
৫: সহিহ বুখারি ৩০১৭
সমাপ্ত

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads