১২ আগস্ট ২০২৫, ঢাকা — জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, কবি ও সংগঠক মতিউর রহমান মল্লিকের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে তার কবর জিয়ারত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০১০ সালের ১২ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন কবি মতিউর রহমান মল্লিক। পরে তাকে মিরপুর কালশী কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন তিনি কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ কবি কর্মজীবনে সাহিত্য সম্পাদনা, সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিচালনা, গান রচনা ও পরিবেশনসহ নানা ক্ষেত্রে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক, বিপরীত উচ্চারণ সাহিত্য সংকলনের সম্পাদক এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাঙালি মুসলিমদের সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে তিনি স্বতন্ত্র একটি ধারা গড়ে তোলেন। সেই ধারারই পরিণতি হিসেবে ১৯৭৮ সালে ঢাকায় তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী, যা দেশ-বিদেশের ইসলামি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য এক অনুকরণীয় মডেল হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তার অনুপ্রেরণায় গড়ে ওঠে অসংখ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন।
তার সৃষ্ট জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে— তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর, রাসুল আমার ভালবাসা, পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়, এলো কে কাবার ধারে ইত্যাদি। পাশাপাশি তিনি নীষন্ন পাখির নীড়ে, আবর্তিত তৃণলতা, তোমার ভাষার তীক্ষ্ন ছোরা, অনবরত বৃক্ষের গান ও রঙিন মেঘের পালকিসহ একাধিক কাব্যগ্রন্থ এবং ইসলামি গানের সংকলন প্রকাশ করেছেন। অনুবাদক হিসেবেও তিনি সমান জনপ্রিয়; আফগান সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে রচিত পাহাড়ি এক লড়াকু তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য অনুবাদ।
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় সাহিত্য পরিষদ স্বর্ণপদক, প্যারিস সাহিত্য পুরস্কার ও বায়তুশ শরফ সাহিত্য পুরস্কারসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
আজকের দোয়া ও কবর জিয়ারতে উপস্থিত ছিলেন— সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক পরিচালক হাসনাত আব্দুল কাদের, আমিনুল ইসলাম, শিল্পী মশিউর রহমান, শিল্পী মালিক আব্দুল লতিফ, সাবেক পরিচালক শিল্পী আবু রায়হান, বর্তমান পরিচালক শিল্পী জাহিদুল ইসলাম এবং সংগঠনের বর্তমান দায়িত্বশীলবৃন্দ। কবর জিয়ারত শেষে কবির রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। (বিজ্ঞপ্তি)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন